প্রেস বিবৃতি
নং.
তারিখঃ ৭/৬/২০২১
প্রতি
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী
পশ্চিমবঙ্গ সরকার
বিকাশ ভবন
মহাশয়,
আপনার মন্ত্রক থেকে কোভিড পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সংগঠিত করার বিষয়ে অভিমত চাওয়া হয়েছে সমাজের বিভিন্ন অংশের থেকে। আমাদের সংগঠন এই প্রসঙ্গে মনে করে, কোনোরকম মূল্যায়ন ব্যতীত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের মত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার পরীক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ করা তাদের ভবিষ্যতের পক্ষে ভাল হবে না। দুটি পরীক্ষাই হওয়া উচিৎ। তবে পরীক্ষার পদ্ধতি ও প্রকরণ নিয়ে আলাপ আলোচনা চলতে পারে। কেডিড সংক্রমণের হার আপাতত কমতে শুরু করেছে, ফলতঃ আরো কিছুদিন অপেক্ষা করে এই পরীক্ষা সংগঠিত করার চেষ্টা করা উচিৎ।
পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্র অবশ্যই তাদের বাসস্থানের এলাকায় হওয়া উচিৎ প্রয়োজনে শারীরিক দুরত্ব সুনিশ্চিত করতে বেশ কিছু অস্থায়ী পরীক্ষাকেন্দ্র নির্মাণ করে পরীক্ষা নেওয়া উচিৎ। পরীক্ষার্থী, পরিদর্শক ও শিক্ষাকর্মীদের অগ্রাধিকার দিয়ে বিনামূল্যে টীকাকরণ করা উচিৎ। পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রাত্যহিক স্যানিটাইজেশন, পরীক্ষার্থীদের বিনামূল্যে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিলি করা আবশ্যিক হওয়া উচিৎ। সশরীরে উপস্থিত থেকে পরীক্ষা দেওয়ার বিকল্প হিসেবে যে প্রস্তাবগুলি উঠে আসছে, যেমন অনলাইন পরীক্ষা বা হোম অ্যাসাইনমেন্ট প্রভৃতি, সেগুলির ক্ষেত্রে হয় সম্পূর্ণ পরিকাঠামোর অভাব, অথবা পরীক্ষার্থীদের সড়গড় হওয়ার সমস্যা দরিদ্র প্রান্তিক পরীক্ষার্থীদের অসুবিধায় ফেলবে।
ফলতঃ সাবেক পদ্ধতিতে পরীক্ষা হওয়াই শ্রেয়, যদিও প্রশ্নপত্রের ধরন বা পরীক্ষার সময়সীমা নিয়ে আরো চর্চার সুযোগ রয়েছে। খেয়াল রাখতে হবে, সর্বভারতীয় বোর্ডের ছাত্রদের সাথে প্রতিযোগিতায় বাংলার ছেলেমেয়েরা যেন পিছিয়ে না পড়ে। সেক্ষেত্রে শিক্ষাবর্ষ পিছনোর দাবিও কেন্দ্র সরকারের কাছে তোলা উচিৎ রাজ্যের তরফে।
আপনারা আমাদের প্রস্তাব বিবেচনা করবেন বলে আশা রাখি।
ধন্যবাদান্তে,
প্রতীকউর রহমান
(সভাপতি)
সুজন ভট্টাচার্য্য
(সম্পাদক)
----------------------------------------
প্রেস বিবৃতি
নং.
তারিখঃ ৭/৬/২০২১
বিষয়ঃ মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক ও পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা
পশ্চিমবঙ্গে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জলঘোলা চলছে। ছাত্রছাত্রী অভিভাবকরা এই পরীক্ষা নিয়ে ব্যাপক দিশাহীনতার মধ্যে দিন কাটিয়েছেন। এমতাবস্থায়, গত পরশুদিন রাজ্য সরকারের তরফে পরীক্ষা হওয়া উচিৎ কিনা, এই সংক্রান্ত মতামত জানানোর জন্যে তিনটি মেইল আইডি দেওয়া হয় এবং পরদিন, অর্থাৎ গতকাল দুপুরের মধ্যে সংশিষ্ট মেইল আইডিতে ছাত্রছাত্রীরা মেইল করার জন্যে আবেদন জানানো হয়।
প্রথমেই প্রশ্ন মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের মতন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতামত জানানোর জন্যে এতো কম সময় দেওয়া হলো কেন? গতকাল দুপুরের মধ্যে তিরিশ হাজার ছাত্রছাত্রী মেইল করে তাদের মতামত জানায় এবং তার খানিক সময়ের মধ্যেই রাজ্য সরকার জানিয়ে দেয় যে এবছর মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হবেনা। এখন প্রশ্ন হলো, এই অতি অল্প সময়ে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর মতামত কীভাবে পড়লো শিক্ষাদপ্তর? তাহলে কী তাদের পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত পূর্বনির্ধারিত ছিল? যদি তাই হয়, তাহলে ছাত্রছাত্রীদের মতামত জানতে চাওয়ার এই প্রহসনের অর্থ কী?
আমরা ইতিমধ্যেই দেখেছি, এই কোভিড পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কেরালা সরকার পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গ সরকার অকারণ দ্রুততার সাথে যথেষ্ট বিবেচনা না করেই পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন, এমনকি রাজ্য সরকার এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ছাত্রসংগঠনগুলির সাথে আলোচনার প্রয়োজন বোধ করলেন না। অথচ এই সিদ্ধান্তের সাথে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনের আগে পরীক্ষার্থীদের জন্যে ট্যাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঙ্গতিপূর্ণ হচ্ছে না, ক্রমশ পরিষ্কার হচ্ছে রাজ্য সরকারের শিক্ষাবিমুখ চরিত্র। পাশাপাশি বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে রাজ্য সরকার একরাশ ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছে। এই সমস্ত অস্বচ্ছতার শিকার হয়ে আত্মহত্যা করলেন দিনহাটার পরীক্ষার্থী বর্ণালী বর্মন। বর্ণালী পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে তার মতামত জানিয়েছিলেন।
আমরা বর্ণালীর মৃত্যুর বিচার চাই এবং রাজ্য সরকারের স্বৈরাচারী মতামতের তীব্র বিরোধিতা করছি। আমরা দাবি জানাচ্ছি, পরীক্ষা বিষয়ে পরীক্ষার্থী-অভিভাবক-শিক্ষাবিদ-শিক্ষাকর্মী ও সমাজের অন্যান্য অংশে মতামতের যে ভিন্নতা রয়েছে তা পর্যালোচনা করে রাজ্য সরকার যেন পরীক্ষা সংগঠিত করার সিদ্ধান্ত আরেকটু সময় নিয়ে পুনর্বিবেচনা করেন।
ধন্যবাদান্তে,
প্রতীকউর রহমান
(সভাপতি)
সৃজন ভট্টাচাৰ্য্য
(সম্পাদক)
Copyright © 2024 SFI, West Bengal State. All Rights Reserved. |